র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, র্যাবের একটি দল রাজধানীর গুলশানের একটি বাড়ি থেকে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি গ্রেফতার করেছে। ২৮ আগস্ট রাতে তারা বিষয়টি সবাইকে তথ্য নিশ্চিত করেছে ।
তাকে রংপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে স্বর্ণশ্রমিক মুসলিম উদ্দিন (৩৮) নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। নিহতের স্ত্রী দিলরুবা আক্তার মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে মামলাটি আদালতে দায়ের করেন । মামলায় সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিসহ মোট ১৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন: রংপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম মোহাম্মদ আহসানুল হক চৌধুরী, সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নাছিমা জামান, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবদুল মালেক, সাধারণ সম্পাদক আবদুল হক প্রামাণিক, আওয়ামী লীগ নেতা রাশেক রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ছায়াদাত হোসেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শফিয়ার রহমান ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল, রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেন, রংপুর রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি আবদুল বাতেন, রংপুর মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান, সাবেক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান, রংপুরের সাবেক পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) হুসাইন মোহাম্মদ রায়হান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি সার্কেল) আবু আশরাফ সিদ্দিকী। এছাড়া আরও অনেককে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মামলার আবেদনে বলা হয়, গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রংপুরের সিটি বাজার এলাকায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সাথে ছাত্র-জনতার সংঘর্ষ ঘটে। এ সময় পুলিশ সদস্যরা এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। মুসলিম উদ্দিন গুলিবিদ্ধ হলে তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে আসামিদের চাপের কারণে মরদেহের ময়নাতদন্ত না করেই তড়িঘড়ি করে দাফন করা হয়।
টিপু মুনশি, প্রথমবার ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে রংপুর-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যও নির্বাচিত হন।
এরপর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে রংপুর-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দশম জাতীয় সংসদে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০১৭ সালে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে তিনি তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ২০১৯ সালে বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।