প্রবাসী আয়ে ডলারের দাম সর্বোচ্চ ১২০ টাকা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রেজারিদের প্রধানরা। দেশের ব্যাংকগুলো সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে প্রবাসী আয় কেনার ক্ষেত্রে ডলারের দাম ১২০ টাকার বেশি হবে না। গত বৃহস্পতিবার সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানদের একটি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় অংশ নেওয়া একাধিক ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানরা জানান, এটি মূলত দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ডলারের দামের অস্থিরতা কমানোর জন্য করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় অনলাইনে অনুষ্ঠিত এই সভায় সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের ৪২ জন ট্রেজারি প্রধান অংশ নেন। যারা সভায় অংশ নিতে পারেননি, তাদের সাথে যোগাযোগ করে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়। সভার মূল উদ্দেশ্য ছিল ডলারের দামের অস্থিরতা কমিয়ে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা। সভায় উপস্থিত সব ট্রেজারি প্রধানরা একমত হন যে, প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে ডলারের দাম ১২০ টাকার বেশি না দেওয়া উচিত।
অনেকদিন ধরে বিভিন্ন ব্যাংক এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে বিভিন্ন দামে প্রবাসী আয়ের ডলার কিনছিল। এর ফলে, বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো একধরনের একচেটিয়া বাজার তৈরি করেছিল, যা অধিকাংশ ব্যাংককে তাদের ওপর নির্ভরশীল করে তুলেছিল। এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো বেশি লাভের আশায় প্রবাসী আয় ধরে রাখত, যার ফলে কোনো কোনো ব্যাংক বেশি প্রবাসী আয় পেত এবং কেউ কেউ কম। এই একচেটিয়া বাজার বন্ধ করার জন্য ট্রেজারি প্রধানরা উদ্যোগ নেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো গ্রাহকের কাছে ডলার বিক্রির ক্ষেত্রে ১২০ টাকার বেশি চার্জ নিতে পারবে না। ২৮ আগস্টের আন্তব্যাংক লেনদেনেও প্রতি ডলার ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
ব্র্যাক ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধান মো. শাহীন ইকবাল বলেন, ‘ডলারের দামের অস্থিরতা কমিয়ে স্থিতিশীলতা আনতে আমরা সব ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানরা একমত হয়েছি যে, প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে ডলারের দাম ১২০ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়।’
এর আগে ১৪ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে আন্তব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনে বিদ্যমান ব্যান্ড ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ করা হবে, যার ফলে ব্যাংকগুলো ডলারের বিনিময় হার ১১৭ টাকা থেকে ১২০ টাকার মধ্যে নির্ধারণ করতে পারবে।
অন্যদিকে, চলতি মাসের ১ থেকে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত দেশে ২০৭ কোটি ১০ লাখ ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬৪ কোটি ডলার বেশি।